আসসালামু আলাইকুম প্রিয়:জেনে নিন বা পড়ুন; জাহান্নাম বা দোযখ সৃষ্টির কাহিনী, কীভাবে সৃষ্টি হলো জাহান্নাম!
জাহান্নামের আগুন এর চেয়ে কত ভয়াবহ তা কল্পনার বাইরে!
দেখুন এই পৃথিবীতে কত ভয়ানক বিষাক্ত সাপ এর চেয়ে কত গুণ বিষাক্ত সাপ জাহান্নামে আছে তা কল্পনার বাইরে
তাই চলুন আমাদের জীবন সুন্দর ও সহজ, পরকালে সফলতা পেতে অবশ্যই আল-কুরআন ও সুন্নাহ অনুশরণ করি!
জাহান্নাম বা দোযখ সৃষ্টির কাহিনী!
⬛
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একটি সবুজ পাথরের নাম ‘সারা। এ সারা পাথরের নিচেই জাহান্নাম সৃষ্টি করা হয়েছে। দোযখের সর্দার হচ্ছেন মালেক। তার অধীনেই দোযখ। আল্লাহ পাক উনিশ জন ফেরেশতা তৈরি করে তাদের সকলকে দোযখের সর্দার ফেরেশতা মালেকের অধীনস্ত করে দিয়েছেন। আল্লাহ্ পাক ইরশাদ করেন- জাহান্নামে যে উনিশ জন ফেরেশতা রয়েছে। তাদের প্রত্যেকের ডানে বামে সত্তর হাজার করে হাত প্রত্যেক হাতে সত্তর হাজার করে হাতের পাতা, প্রতিটি পাতায় সত্তর হাজার। করে আঙ্গুল এবং প্রত্যেক আঙ্গুলের ওপর সত্তর হাজার করে অজগর রয়েছে। প্রত্যেকটি অজগরের মাথায় এক একটি সাপ, যার প্রতিটির দূরত্ব সত্তর সহস্র বছরের রাস্তা। প্রত্যেকটি সাপের মাথায় একটি করে বিচ্ছ। এ বিচ্ছ যদি কোন দোযখীকে দংশন করে তবে তার ব্যথায়। সত্তর হাজার বছর পর্যন্ত গড়াগড়ি দিয়ে কান্নাকাটি করতে থাকবে। বাম হাতের প্রতিটি আঙ্গুলের ওপর আগুনের এক একটি খুঁটি। সে খুঁটির যে কোন একটিও যদি হাশরের মাঠে ফেলা হয় আর যদি জিন ও মানুষসহ সমগ্র সৃষ্টি মিলে সেটিকে হেলাতে চেষ্টা করে, তবু তা হেলাতে সক্ষম হবে না।।
দোযখের সে ঊনিশ জন ফেরেশতার প্রতি যখন নির্দেশ হল, তােমরা দোযখে যাও। তখন তারা নিবেদন করলেন- হে আল্লাহ! দোযখের আগুনের ভয়ে আমরা সেখানে যেতে পারছি না। তখন আল্লাহ তাআলার হুকুমে জান্নাত থেকে একটি সীল নিয়ে দোযখের সকল ফেরেশতার। ললাটে সীলমোহর মেরে দেয়া হয় এবং সে সীলমােহরের ওপর কালেমা 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ লেখা ছিল। এ সীলমােহর লাগানাের উদ্দেশ্য হল দোযখের আগুন যেন ফেরেশতাদের ওপর কোন ক্রিয়া করতে না পারে। দোযখের উনিশ জন ফেরেশতা কালেমা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহর বরকতে দোযখে প্রবেশ করেছেন। প্রবেশকাল থেকে শেষ পর্যন্ত তারা দোযখে অবস্থান করবেন। আল্লাহ তাআলার ইরশাদ করেন-
أولئك كتب في قلوبهم الإيمان
উচ্চারণঃ উলা-য়িকা কাতাবা ফী কুলুবিহিমুল ঈমান।
অর্থ ঃ তারা ঐসব লােক যাদের হৃদয়ে ঈমান লেখা হয়েছে। অর্থাৎ যে সকল মু'মিনের। ললাটে ও হৃদয়ে কালেমার সীলমােহর থাকবে কোন অবস্থাতেই দোযখের আগুন তাকে স্পর্শ করতে পারবে না। দোযখের স্তর সাতটি। কালামে পাকে আল্লাহ্ পাক ইরশাদ করেন-
(..... )
অর্থ: দোযখের সাতটি স্তর রয়েছে এবং প্রত্যেক পৃথক পৃথক স্তরের জন্য দল নির্দিষ্ট রয়েছে। দোযখের সাতটি স্তর হল জাহীম, জাহান্নাম, সাকার, সায়ীর, লাযা, হাবিয়া ও হােতামা
আল্লাহ্ পাক আরাে ইরশাদ করেন-
فخلف من بعدهم خلف أضاعوا الصلوة واتبوا الشهوات فسوف يلقون غيا۔
উচ্চারণ : ফাখালাফা মিম বা'দিহিম খালফুন আদোয়া-উ'ছছলা-তা ওয়াত্তাবাউ’শ শাহাওয়াতি ফাসাওয়া ইয়ালক্বাওনা গাইয়্যান।
জিবরাঈল (আ) এ আয়াতের ওহী নিয়ে আগমনের সাথে সাথে যমীন ও পাহাড়ে এক কম্পন সৃষ্টি হয়। তৎক্ষণাৎ এমন এক বিকট শব্দ ভেসে আসে যাতে রাসূলুল্লাহ (স)-এর। চেহারা মােবারক বিবর্ণ হয়ে যায়। তিনি হযরত জিবরাঈল (আ)-কে জিজ্ঞেস করলেন, এ বিকট শব্দ কিসের এবং কোত্থেকে এসেছে? তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (স)! আদম। সৃষ্টির সাত হাজার বছর পূর্বে সত্তর হাজার মণ ওজনের একটি পাথর জাহান্নামের পাড়ে পড়া। ছিল । সে পাথরটি পনর হাজার বছর ধরে দোযখের নিচের দিকে যেতে থাকে। এ মুহর্তে সেটি হােতামার গভীর তলদেশে গিয়ে ঠেকেছে। উক্ত শব্দই আপনার ত্রুত বিকট শব্দ। রাসূলুল্লাহ (স) বললেন, হে জিবরাঈল! সেটা কাদের জন্য? জিবরাঈল (আ) বলেন, সেটা মুনাফিকদের। অবস্থান স্থল। আল্লাহ্ তাআলা এরশাদ করেন -
অর্থ ঃ নিশ্চয় মুনাফিকরা দোয়খের সর্বনিম্নস্তরে অবস্থান করবে।
দোযখের ষষ্ঠ স্তরে শেরেককারীরা, পঞ্চম স্তরে প্রতিমা উপাসকরা, চতুর্থ স্তরে মদ বিক্রেতা, ততীয় স্তরে মিথ্যাবাদী, দ্বিতীয় স্তরে কাফেররা এবং প্রথম স্তরে গুনাহগার উম্মতে মুহাম্মদীরা অবস্থান করবে। আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করেন-
إن الذين آمنوا والذين هادوا والضبئين والتصری والمجوس والذين أشركوا ۔
উচ্চারণঃ ইন্নাল্লাযীনা আ-মানূ ওয়াল্লাযীনা হা-দূ ওয়াস ছােবিঈনা ওয়ান নাছােয়া-রা ওয়াল মাজূসা ওয়াল্লযীনা আশরাকূ।।
অর্থঃ মু'মিনদের মাঝে যারা গুনাহগার, ইহুদী, সাবী (প্রতিমা উপাসকদের একদল), নাসারা, অগ্নিপূজক এবং অংশিবাদী-এই ছয় দলের লােকেরা দোযখে অবস্থান করবে দোযখের প্রতিটি স্তরের দুরত্ব সত্তর বছরের পথ।
হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, আল্লাহর কুদরতে সহস্র বছর পর্যন্ত দোযখের অগ্নি জ্বালানাে। হলে তা লাল বর্ণ ধারণ করে। আবার সহস্র বছর জ্বালানাের পর তা সাদা বর্ণ ধারণ করে। অতঃপর সহস্র বছর জ্বালানাে হলে তা কাল বর্ণ ধারণ করে। কিয়ামত পর্যন্ত দোযখের আগুন এ কাল বর্ণই থাকবে- যেমন অন্ধকার রাত। আর পাথরের একটি টুকরা দোযখে রাখা হয়েছে, যার প্রস্থ পাচশ’ বছরে পথ আর অবস্থান কিয়ামত পর্যন্ত দোযখের উপর হবে। অতঃপর আল্লাহ পাক বালু সৃষ্টি করেন। আল্লাহ্ পাক বাতাসকে হুকুম করলে বাতাস সে বালুর একভাগ যমীনের উপর এবং একভাগ নিচে নিয়ে যায়। পরক্ষণেই ধোঁয়াবিহীন অগ্নি সৃষ্টি করে তা থেকে জিন জাতি সৃষ্টি করেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন- আগুনের লেলিহান শিখা হতে। আমি জিন জাতিকে পয়দা করেছি এবং জিনদের দ্বারা সারা দুনিয়া ভরে যায়। পরে আল্লাহ পাক তাদের নিকট ইউসুফ নামক এক নবী পাঠান। আল্লাহ পাক সে নবীকে শরীঅতের বিধি-বিধান শিক্ষা দেন এবং তিনি জিনদেরকে আল্লাহ তাআলার দিকে আহ্বান জানাতে থাকেন। কিন্তু জিনেরা তাঁর আনুগত্য তাে করলইনা এবং তাকে হত্যা করে এবং দুনিয়ায় জুলুম-ফাসাদ ছড়াতে থাকে। তখন আল্লাহ পাক আযরাঈল (আ)-কে অন্যান্য ফেরেশতাসহ প্রেরণ করেন। তাঁরা জিনদেরকে হত্যা করে সমগ্র দুনিয়া প্রাণীমুক্ত করে ফেলেন।
মূলঃ উর্দ্দূ কিতাবের সরল বঙ্গানুবাদ তাহের সুরাটী (ভারত)



1 মন্তব্যসমূহ
😭😭😭😭😭😭 allah
উত্তরমুছুনAssalamualaikum warahmatullahi wa barakatuhu!