সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

লাওহে মাহফুজ দর্শনে ফেরেশতারা এবং ইবলীস ও ইবলীসের মনে কুমতলব ও অহংকারের সূত্রপাত

! প্রিয় ইভেন্টের কন্টেন-এ সকল আম্বিয়ায়ে কেরামের জীবনালেখ্য বিভিন্ন তাফসীর, হাদীস প্রকাশসহ এবং সমকালীন গ্রন্থের সাহায্যে চেষ্টা করেছি ইহুদীদের মিথ্যা প্রচারণা থেকে রক্ষা করতে। কতটুকু সফল হবো তা পাঠকদের সুবিবেচনার জন্য রইল। এ অধমের প্রচেষ্টার ফসল আলোচ্য (কাসাসুল আম্বিয়া গ্রন্থ থেকে আলোচিত) কনটেন্ট দ্বারা পাঠক সমাজ যদি সামান্যতমও উপকৃত …

islamicthumb1

!

islamicthumb2

প্রিয় ইভেন্টের কন্টেন-এ সকল আম্বিয়ায়ে কেরামের জীবনালেখ্য বিভিন্ন তাফসীর, হাদীস প্রকাশসহ এবং সমকালীন গ্রন্থের সাহায্যে চেষ্টা করেছি ইহুদীদের মিথ্যা প্রচারণা থেকে রক্ষা করতে। কতটুকু সফল হবো তা পাঠকদের সুবিবেচনার জন্য রইল। এ অধমের প্রচেষ্টার ফসল আলোচ্য (কাসাসুল আম্বিয়া গ্রন্থ থেকে আলোচিত) কনটেন্ট দ্বারা পাঠক সমাজ যদি সামান্যতমও উপকৃত হয় তবেই আমার শ্রম সার্থক হবে। পরিশেষে, আল্লাহ আমাদের সকলকে আম্বিয়ায়ে কেরামের জীবনী গ্রন্থ থেকে উপকৃত হওয়ার তওফিক দান করুন। আমীন।

লাওহে মাহফুজ দর্শনে ফেরেশতারা এবং ইবলীস ও ইবলীসের মনে কুমতলব ও অহংকারের সূত্রপাত

লাওহে মাহফুজ দর্শন।

ইবলীস আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা জানাল হে প্রভু! তােমারই অসীম অনুগ্রহে আমি অতি সামান্য স্তর থেকে সসম্মানে অতি উচ্চস্তরে পৌঁছেছি। তােমারই অসীম অনুগ্রহে আমি তােমার নৈকট্য লাভ করতে সমর্থ হয়েছি। এখন আমার মনের একান্ত বাসনা হল তােমার পবিত্র লাওহে মাহফুজ দর্শন করে আমার জীবন ধন্য ও সার্থক করি। তুমি অনুগ্রহ করে আমার এই আকাঙ্খা পূর্ণ করা। পরম দয়ালু আল্লাহ্ তাআলা ইবলীসের প্রার্থনা কবুল করে মিকাঈল। ফেরেশতাকে নির্দেশ দিলেন ঃ ইবলীসকে পবিত্র লাওহে মাহফুজের একান্ত নিকটে নিয়ে দেখিয়ে আনার জন্যে। আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী হযরত মিকাঈল (আ) ইবলীসকে লাওহে মাহফুজের নিকটে নিয়ে গেল। ইবলীস সেখানে পৌছে এক দৃষ্টিতে লাওহে মাহফুজের দিকে তাকিয়ে অদৃষ্টলিপি পাঠ করতে লাগল । হঠাৎ এক স্থানে তার দৃষ্টি পড়ল, সেখানে লিখিত রয়েছে আল্লাহর একবান্দা ছয়লক্ষ বছর পর্যন্ত তার মাবুদের ইবাদত করবে। কিন্তু অবশেষে আল্লাহর একটি আদেশ অমান্য করে সে জান্নাত থেকে বিতাড়িত হবে । ঐ বান্দা আসমান ও যমীনে মালউন বা অভিশপ্ত নামে পরিচিত হবে। ইবলীস এ লিপি পাঠের পর আপনা হতে কেঁদে ফেলল এবং সিজদায় পতিত হল এবং এ সিজদায় সে দীর্ঘ ছয় হাজার বছর অতিবাহিত করল। ছয় হাজার বছর পর মাথা তুলে দেখতে পেল তার সিজদাহর জায়গায় লিখিত রয়েছে ' লা’আনাতুল্লা-হি ‘আলা-ইবলীস’ অর্থাৎ ইবলীসের উপরে আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিত হউক। ইবলীস আরজ করল, হে আমার রব! ইবলীস কে? তাকে দেখিয়ে দিন। আমি তাকে যথােচিত শিক্ষা দান করি। জবাবে আল্লাহ্ তাআলা ইবলীসকে বললেন , অচিরেই তুমি তাকে দেখতে পাবে। এ কথা শুনে ইবলীস সেখানে দাড়িয়ে একহাজার বছর পর্যন্ত পাঠ করল, লা’ লানাতুল্লাহি আলা ইবলীস- ইবলীসের ওপর আল্লাহর লানত বর্ষিত হউক। এখানে উল্লেখ করা প্রয়ােজন যে, তখনও ইবলীস এ নামে পরিচিত হয়নি। আর তার এ কথা তখনও জানা ছিল না যে, এক সময় তারই নাম ইবলীস হবে। তখন আল্লাহ্ তাআলা ইবলীসকে বললেন, ওহে! বলত আমার যে বান্দাহ আমার অশেষ অনুগ্রহ লাভ করেও আমার হুকুম অমান্য করবে, তার কেমন শাস্তি হওয়া উচিত? জবাবে ইবলীস বলল, হে আমার রব! এরূপ অকৃতজ্ঞ ব্যক্তির ওপর আপনার কঠিন শাস্তি ও অভিশাপ বর্ষিত হওয়া উচিত। আল্লাহ তাআলা বললেন, তােমার এ মন্তব্যটা এক টুকরা তখতিতে লিখে তােমার নিকটই রেখে দাও, পরে তা কাজে আসতে পারে। এক টুকরা তখতিতে লিখে রেখে দিল ইবলীস তখনই ।

ইবলীসের মনে কুমতলব ও অহঙ্কারের সূত্রপাত।

উল্লেখিত ঘটনার কিছুদিন পরে হঠাৎ একদিন ইবলীস মনে মনে ভাবল- এখন তাে ফেরেশতা জগতে ও জিনের রাজ্যে এমন কোন ফেরেশতা বা জিন নেই যে আমার কোন নির্দেশ অমান্য করে। কেননা, আসমান যমীন বা জিন ও ফেরেশতাকুলের মাঝে আমার প্রভাব এখন অতুলনীয়। আমার প্রভাব প্রতিপত্তি ও ক্ষমতার সাথে মােকাবেলা করার মত এখন আর কেউ নেই। এমতাবস্থায় যদি কোন কারণবশতঃ আল্লাহ্ তাআলা নিজের দায়িত্ব থেকে অবসর গ্রহণ করেন কিংবা স্বেচ্ছায় ঘােষণা করেন যে, আমি এখন এ সৃষ্টি জগত পরিচালনার দায়িত্ব হতে অবসর গ্রহণ করছি। অতএব এখন তােমাদের মধ্য হতে যােগ্যতম ব্যক্তি আমার সৃষ্টজগতের পরিচালনার ভার গ্রহণ কর। তাহলে নিশ্চয়ই একমাত্র আমিই এ পদের সুযােগ্যতম ব্যক্তি হিসেবে এ দায়িত্ব গ্রহণ করে সুষ্ঠুরূপে পালন করতে পারি। মূলতঃ এখন আর আমি কোন দিক দিয়েই আল্লাহ তাআলা অপেক্ষা হীনবল ও কম ক্ষমতাবান নই। যাবতীয় ফেরেশতা ও জিনদের ওপর এখন আমার যেরূপ প্রভাব, তাতে আল্লাহ্ তাআলার সাথে আমার কোন ব্যাপার নিয়ে বিরােধে অবশ্যই তারা আমার পক্ষাবলম্বন করবে, তাতে কোন সন্দেহ নেই।

লাওহে মাহফুজ দর্শনে ফেরেশতারা।

এর কিছুদিন পরেই একদা ফেরেশতারা লাওহে মাহফুজে লিখিত দেখতে পান যে, অচিরেই আমার জনৈক বান্দাহর ওপরে চিরদিনের জন্য আমার লা'নত বর্ষিত হবে। এ লেখা পড়ে ফেরেশতারা ভয়ে অস্থির হয়ে পড়ল। তারা ভয়ে থরথর করে কাপতে লাগল। তারা সঙ্কিত হয়ে পড়ল। হায় না জানি তাদের মধ্যেই কোন হতভাগ্য বান্দাহর উপরে এ দুর্ভাগ্য নেমে আসবে। ফেরেশতারা এ দুশ্চিন্তায় কেঁদে কেঁদে হয়রান পেরেশান হয়ে সকলে মিলে তাদের ওস্তাদ ইবলীসের নিকট উপস্থিত হল। ইবলীস এর কারণ জানতে চাইলে ফরেশতারা বলল। ওস্তাদ! ঐ যে পড়ে দেখুন; লাওহে মাহফুজের এ লেখা পড়ে আমাদের সকলেরই মনে দারুণ আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। আপনি আমাদের জন্য দোয়া করুণ যাতে আমরা আল্লাহর লানত থেকে রক্ষা পেতে পারি। ইবলীস ফেরেশতাদের মিনতিতে তাচ্ছিল্যের সাথে মুচকী হেসে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করল, হে মাবুদ! তুমি ফেরেশতাদের কারাে ওপর লা'নত দিও না। আল্লাহ তাআলা ইবলীসের। ঐ প্রার্থনা কবুল করলেন। ফেরেশতারা আল্লাহর সেই নির্ধারিত গযব থেকে রক্ষা পেল । কিন্তু ইবলীস সমগ্র ফেরেশতার জন্য দোয়া করল বটে কিন্তু অহংকার বশতঃ নিজের জন্য দোয়া করতে ভুলে গেল। এর কিছু দিন পরও একদিন ইবলীস আরশে মুআল্লার একখানা তখতির উপরে উজ্জ্বল নূরের হরফে ‘আঊ'যুবিল্লা-হি মিনাশ শাইতােয়া-নির রাজীম- “বিতাড়িত শয়তান হতে আল্লাহ তাআলার নিকট সাহায্য প্রার্থনা করছি” লিখিত দেখতে পেল । এ লেখা পাঠ করে ইবলীস অত্যন্ত বিস্মিত হয়ে আল্লাহর নিকট জিজ্ঞাসা করল, হে মাবুদ! কে সেই দুষ্ট পাপিষ্ঠ। শয়তান যাহার নিকট হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য তােমার কাছে প্রার্থনা করার কথা লিখিত রয়েছে? আল্লাহ তায়ালা জবাব দিলেন, তুমি শীঘ্রই তাকে চিনিতে পারবে।

মূলঃ উর্দ্দূ কিতাবের সরল বঙ্গানুবাদ তাহের সুরাটী (ভারত)

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    0 মন্তব্যসমূহ

    নূরে মুহাম্মাদী (স) - সৃষ্টি তাঁর থেকে সকল মাখলুকের সৃষ্টি বিষয়ক!
    প্রিয় ইভেন্ট অ্যাপলিকেশন ডাউনলোড!