সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ইবলীসের ইতিহাস

ইবলীসের ইতিহাস ইবলীসের ইতিহাস প্রিয় ইভেন্টের কন্টেন-এ সকল আম্বিয়ায়ে কেরামের জীবনালেখ্য বিভিন্ন তাফসীর, হাদীস প্রকাশসহ এবং সমকালীন গ্রন্থের সাহায্যে চেষ্টা করেছি ইহুদীদের মিথ্যা প্রচারণা থেকে রক্ষা করতে। কতটুকু সফল হবো তা পাঠকদের সুবিবেচনার জন্য রইল। এ অধমের প্রচেষ্টার ফসল আলোচ্য (কাসাসুল আম্বিয়া গ্রন্থ থেকে আলোচিত) কনটেন্ট দ্বারা পা…

ইবলীসের ইতিহাস

islamicthumb1

ইবলীসের ইতিহাস

islamicthumb2

প্রিয় ইভেন্টের কন্টেন-এ সকল আম্বিয়ায়ে কেরামের জীবনালেখ্য বিভিন্ন তাফসীর, হাদীস প্রকাশসহ এবং সমকালীন গ্রন্থের সাহায্যে চেষ্টা করেছি ইহুদীদের মিথ্যা প্রচারণা থেকে রক্ষা করতে। কতটুকু সফল হবো তা পাঠকদের সুবিবেচনার জন্য রইল। এ অধমের প্রচেষ্টার ফসল আলোচ্য (কাসাসুল আম্বিয়া গ্রন্থ থেকে আলোচিত) কনটেন্ট দ্বারা পাঠক সমাজ যদি সামান্যতমও উপকৃত হয় তবেই আমার শ্রম সার্থক হবে। পরিশেষে, আল্লাহ আমাদের সকলকে আম্বিয়ায়ে কেরামের জীবনী গ্রন্থ থেকে উপকৃত হওয়ার তওফিক দান করুন। আমীন।

ইবলীসের ইতিহাস

ইবলীসের ইতিহাস

জিনদের পঞ্চমবারের পয়গাম্বর ও বাদশাহ হামুসের পুত্র ছিল ইবলীসের জনক। তার নাম ছিল খবীস। খবীসের আকৃতি ছিল ভয়ঙ্কর এক সিংহের ন্যায় । তার স্বভাব প্রকৃতিও সিংহের ন্যায়ই ছিল। একদিকে তার দেহে ছিল পঞ্চ শক্তি অন্য দিকে তার চেহারায় ছিল সুস্পষ্ট ধূর্ততার ছাপ। এ খবীসই ছিল পাপীষ্ঠ জিনদের মাথার তাজ। ইবলিসের মাতা ছিল জিনজাতির পঞ্চম নেতা হামুসের কন্যা। তার নাম ছিল নিলবিস। নিলবিস জিন দেখতে ঠিক একটি নেকড়ে বাঘের মত। তার প্রকৃতিও ছিল অবিকল নেকড়ের ন্যায়। এক বর্ণনায় আছে, জাহান্নামের আগুনের খবিস ও নিলবিসের মিলনে ইবলীসের জন্ম হয়। সুতরাং পিতামাতা ও জাহান্নাম এই ত্রিস্বত্তার স্বভাব ও প্রকৃতির সম্পূর্ণ প্রভাবই ইবলীসের চরিত্রে নিহিত ছিল । ইবলীসের পিতার সারবুক নামে সর্ববিদ্যায় পারদর্শী একজন বন্ধু ছিল। খবিসের পুত্র ইবলীসের শিক্ষা-দীক্ষার ভার তার পিতা উক্ত বন্ধু সারবুকের হাতে অর্পণ করল । ইবলীস ছিল অতিশয় মেধাবী ও স্মৃতিশক্তি সম্পন্ন। সুতরাং কোন পাঠই তাকে একাধিকবার বলে দেয়ার প্রয়ােজন হত না। সে। একবার যা শুনত তাই সে চিরদিনের জন্য মনে রাখত। ফলে সারবুকের মনে ইবলীস সম্পর্কে অত্যন্ত উচ্চ ধারণা জন্মেছিল। তাকে পড়াতে শুরু করে সে তার বন্ধু খবিসকে লক্ষ্য করে প্রায়ই বলত, বন্ধু! তােমার পুত্রের ভেতরে যে লক্ষণসমূহ দেখছি তাতে মনে হচ্ছে যে, সে ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই এক মহা বিখ্যাত ব্যক্তিতে পরিণত হবে। আমার শিক্ষকতা জীবনের ছাব্বিশ হাজার বছরের মধ্যে তােমার পুত্র ইবলীসের মত এত তীক্ষ্ম স্মৃতিশক্তিসম্পন্ন ও বুদ্ধিমান ছাত্র আমার হস্তে আর দ্বিতীয়টি পড়েনি। কিন্তু দুঃখের বিষয় তােমার পুত্রটি অত্যাধিক বেয়াদব, অহংকারী এবং ভীষণ একগুয়ে। এটা তার ভবিষ্যতের জন্য সুখকর নয়। তবে সে যাই হউক না কেন, ইবলীসের ভাগ্য সুপ্রসন্ন। ইতিপূর্বে উল্লেখ করেছি যে, ফেরেশতারা জিনকুলকে ধ্বংস করার সময় বালক ইবলীসকে স্নেহবশতঃ হত্যা না করে উল্টা তাকে লালন-পালন করার জন্য আল্লাহর নিকট হতে অনুমতি নিয়ে আসমানে নিয়ে যায় । ফেরেশতারা তাকে প্রথম আসমানে নিয়ে নিজেদের প্রকৃতি ও স্বভাব অনুরূপ আল্লাহর ইবাদত বন্দেগীর নিয়ম-কানুন শিক্ষাদান করল । ইবলীস স্বীয় প্রতিভাবলে অতি অল্প আয়েসে ও সল্পসময়ে শিক্ষা লাভ করে দীর্ঘ এক হাজার বছর প্রথম আসমানে আল্লাহর এবাদাত করল । তথাকার ফেরেশতারা তার ইবাদাতে একাগ্রতা ও নিষ্ঠা দেখে অবাক হয়ে বলতে লাগল যে, আমরা ফেরেশতা জাতি কেবল আল্লাহর ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি হয়েছি। একমাত্র ইবাদতই আমাদের শিক্ষা-দীক্ষা ও ধ্যান - ধারণা সবকিছু। ইবাদতই আমাদের একমাত্র কাজ। তবু কি আশ্চর্য! ইবলিস আমাদের কাছে ইবাদতের কায়দা কানুন শিখে সে যে ইবাদত করছে, তাতে তার ইবাদতের তুলনায় আমরা নিজেদেরকে তাে মােটেই ইবাদতকারী বলতে পারি না। আমাদের ফেরেশতাকূলের মধ্যে তাে কাকেও এমন ধারায় ও এমন নিবিড় ভাবে কখনও ইবাদত করতে দেখি নি। মনে হচ্ছে এখন এর কাছেই আমাদের অনেক কিছু শিখবার ও বুঝবার আছে। ফেরেশতারা তার ইবাদত বন্দেগি দেখে এত মুগ্ধ হল যে, তারা ইবলীসের ‘খাশে’ নামকরণ করল। ইবলীস প্রথম আসমানে এক হাজার বছর ইবাদতের পর দ্বিতীয় আসমানের ফেরেশতারা অতি আদর করে তাকে নিজেদের কাছে নিয়ে গেল। ইবলীস দ্বিতীয় আসমানে পৌছেও পূর্বাপেক্ষা আরও বেশি পরিমাণে ইবাদতে মশগুল হল। এ আসমানের ফেরেশতারা তার ইবাদাত দেখে তাকে ধন্য ধন্য করতে লাগল, শতমুখে তার প্রশংসা করতে লাগল, এবং তারা। ইবলীসের নামকরণ করল আবেদ। দ্বিতীয় আসমানে এক হাজার বছর অবস্থানের পর তৃতীয় আসমানের ফেরেশতারা ইবলীসকে তৃতীয় আসমানে নিয়ে গেল। ৩য় আসমানে এসে সে আরও বেশি পরিমাণে পরম একাগ্রতা ও মনােযােগের সাথে আল্লাহর ইবাদত শুরু করে দিল। সে এখানেও এক হাজার বছর ইবাদত করল । এখানের ফেরেশতারা তার ইবাদতে মুগ্ধ হয়ে তার নাম রাখল ‘অলী’। তারপর চতুর্থ আসমানের ফেরেশতারা আল্লাহর অনুমতি লাভ করে। ইবলীসকে চতুর্থ আসমানে নিয়ে গেল। ইবলীস এখানেও অত্যন্ত একাগ্রতার সাথে দীর্ঘ এক হাজার বছর আল্লাহ্ তাআলার ইবাদতে মশগুল রইল। তথাকার ফেরেশতারা তার ইবাদতে খুশী হয়ে নাম রাখল “ছালেহ”। এইভাবে অবশিষ্ট সকল আসমানে উন্নীত হয়ে প্রত্যেক আসমানে এক হাজার বছর করে ইবাদত করল। তখন পুরাে ফেরেশতা জগতই তার প্রশংসায় মুখরিত হয়ে গেল। সকল ফেরেশতার সন্তুষ্টির ভেতর যে সপ্তম আসমানে উপনীত হয়ে পরম সুখে শান্তিতে বসবাস শুরু করল। ইবলীস ফেরেশতাদের নিকট থেকেই আদব-কায়দা এবং ইবাদতের রীতিনীতি প্রশিক্ষণ। নিয়েছিল। ইবলীস অত্যন্ত মেধাবী হওয়ায় যা শিক্ষা লাভ করত তার কোন কিছুই আর ভুলত না। সুতরাং অতি অল্প সময়ে ফেরেশতাদের নিকট হতে সে সর্ববিষয়ে এত বেশি অভিজ্ঞতা অর্জন করল যে, এখন তার ওস্তাদ ফেরেশতাদের তুলনায় তার জ্ঞানই বেশি হয়ে গেল । তদ্রুপ ফেরেশতাদের ইবাদতের পরিমাণ অপেক্ষা তার ইবাদতের পরিমাণ অনেক বেশি বৃদ্ধি পেল । সাত আসমান ও যমীনের এমন একটি স্থান বাকি থাকল না, যেখানে ইবলীসের সিজদাহ পড়েনি। ফেরেশতারা ইবলীসের ইবাদত বন্দেগী দেখে উপলব্ধি করতে লাগল যে, ইবলীসকে তারা শিক্ষাদান করেছে, এখন সেই ইবলীসের কাছেই তাদের অনেক কিছু শিখার আছে। তাই তারা সকলে আল্লাহর দরবারে আবেদন করল, হে মাবুদ! তুমি তােমার প্রিয় ইবলীসকে যদি আরশে মুআল্লার কাছে উঠিয়ে আন তবে আমরা তার কাছ থেকে অনেক মূল্যবান উপদেশ শুনে অনেক কিছু শিখতে পারতাম। কেননা, সে আমাদের অপেক্ষা অনেক বেশি জ্ঞান অর্জন করেছে। মহান আল্লাহ পাক ফেরেশতাদের এ আবেদন মঞ্জুর করে ইবলীসকে আরশে মুআল্লার নিকট নিয়ে আসলেন। আরশে মুআল্লার কাছেই রয়েছে ইয়াকুত নির্মিত একটি সুউচ্চ মিম্বর, ইবলীস উক্ত মিম্বরে আল্লাহর ইবাদতে রত হল। স্বীয় ইবাদতের অবসর সময়ে সে। ফেরেশতাদেরকে ওয়াজ নসিহতও করতে লাগল। ফেরেশতারা তার ওয়াজ ও অমূল্য। উপদেশাবলী শুনে মুগ্ধ হয়ে সকলেই তার প্রশংসা করতে লাগল। শেষ পর্যন্ত সে মুআল্লিমুল মালাইকাহ বা ফেরেশতাদের শিক্ষক নামে পরিচিত হয়ে গেল।

মূলঃ উর্দ্দূ কিতাবের সরল বঙ্গানুবাদ তাহের সুরাটী (ভারত)

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    0 মন্তব্যসমূহ

    নূরে মুহাম্মাদী (স) - সৃষ্টি তাঁর থেকে সকল মাখলুকের সৃষ্টি বিষয়ক!
    প্রিয় ইভেন্ট অ্যাপলিকেশন ডাউনলোড!